স্বপ্ন ভাঙার গল্প - সুন্দর গল্প

 স্বপ্ন ভাঙার গল্প

আমাদের দেশের মেয়েরা এক বৈষম্যপূর্ণ সমাজে জন্মগ্রহন করে। তারা বাড়ির মধ্যে বন্ধ হয়ে থাকে। 

এদের মধ্যে অনেকেই বিদ্যালয়ের মুখও দেখতে পারেনা। এদের খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে যায় । 

আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলে বাল্যবিবাহ একটি সাধারন বিষয়। সাথী বাল্য বিবাহের স্বীকার হয়েছিল। তার বাবা খুব গরীব ছিলেন। তার বাবা চার সন্তানের ভরণপােষণের হাত থেকে রেহাই পেতে জোর করে সাথীর বিয়ে দেন। 

স্বপ্ন ভাঙার গল্প - সুন্দর গল্প

সাথী যখন ৫ম শ্রেণির ছাত্রী, মাত্র ১২ বছর বয়সে সাথীর বিয়ে হয়ে যায়। সে না বুঝত স্বামী, না বুঝত সংসার। স্বামীর বাড়িতে তাকে রান্না করতে হত, গরু বাছুর দেখাশােনা করতে হত, কাপড় ধােয়া, ধান ভানা এবং আরও অনেক কাজ করতে হত। 

সাথী ক্ৰমে লেখাপড়া ভুলে যেতে লাগলাে, কেননা স্বামীর সংসারে পড়াশুনা চর্চা করার কোন সুযােগ ছিল না। সাথী মনে মনে স্বপ্ন দেখত আবার সে পড়ালেখা করবে। এক টুকরাে খবরের কাগজ কুড়িয়ে পেলে মনটা তার আনন্দে নেচে উঠত। সে খুটে খুটে কাগজ পড়ত। 

দিন চলে যেতে লাগল, সাথীর স্বপ্ন আর সত্যি হল না। হঠাৎ সাথির স্বামীর চাকরি চলে গেলাে। দু'বেলা ঠিকমত খাবার জুটতাে না। সাথীর অবস্থা আরও খারাপ হল, যখন সাথি তিন ছেলে মেয়ের মা হল। 

সাথীকে বাধ্য হয়ে দিন মজুরের কাজ করতে যেতে হত, সাথী মাঠে যেত কাজ করতে। সাথী আয় না করলে স্বামী-সন্তানকে উপােষ থাকতে হত। হঠাৎ এক জ্বরে সাথীর স্বামী মারা গেলে সাথী আসল বিপদে পড়ল। তাকে ভিটে মাটি বেচে রাস্তায় নামতে হল। 

সাথীকে এখন পরের জমিতে দিনমজুরি করে ছােট্ট সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে হয়। মাঝে মাঝে গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে ভাবে, যদি সে পড়াশুনাে করতে পারত, তার বাল্যবিবাহ না হত তবে তার জীবন কেমন হত?

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url